মো:সিরাজুল ইসলাম পলাশ লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটে একসাথে জুমার নামাজ পড়তে বেরিয়েছিলেন দুই বন্ধু কিন্তু পথেই ঘাতক পিকআপ কেড়ে নিল এক বন্ধুর প্রাণ। মুহূর্তের দুর্ঘটনায় নিথর হয়ে গেল বন্ধু মেরাজের দেহ আর সেই নিথর দেহের পাশে গুরুতর আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছিলেন আরেক বন্ধু অনিক। শুক্রবার (২০শে জুন) দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলার লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দর মহাসড়কের বাউরা নবীনগর এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত মেরাজ হোসেনের (২২) আকস্মিক মৃত্যুতে তার পরিবার ও পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহত মেরাজ পাটগ্রাম পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মির্জারকোর্ট এলাকার আলিউল ইসলামের ছেলে। তার বন্ধু অনিক ইসলাম (২৫) একই এলাকার একরামুল হকের ছেলে। তাদের দুজনের বন্ধুত্ব ছিল খুব গভীর।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুরে দুই বন্ধু মিলে জুমার নামাজ পড়ার জন্য পার্শ্ববর্তী বড়খাতা ইউনিয়নের বড় মসজিদে (ভাঙা মসজিদ) যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন অনিক, আর তার পেছনে বসেছিলেন মেরাজ। কিন্তু তাদের সেই যাত্রা আর পূর্ণতা পায়নি। বাউরা নবীনগর সরকারপাড়া মোড়ে পৌঁছাতেই নীলফামারী থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি পিকআপ ভ্যান তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তেই সড়কের ওপর লুটিয়ে পড়েন দু’জন।
এ সময় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান মেরাজ। তার রক্তমাখা নিথর দেহের পাশে গুরুতর আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছিলেন বন্ধু অনিক। স্থানীয়রা ছুটে এসে এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা দ্রুত অনিককে উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন।
ছেলের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ বাবা আলিউল ইসলাম ও মা। তাদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। যে ছেলে একটু আগেই নামাজ পড়তে গেল, সে আর কোনোদিন আসবে না। তাদের বাবা-মা বলে ডাকবে না- এই সত্য মেনে নিতে পারছেন না তারা। বড়খাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। একটি তরতাজা প্রাণ ঝরে গেল। আহত অন্যজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবার অভিযোগ দিলে পিকআপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।