জেনিভা প্রিয়ানা বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি
বাগেরহাটে সরকারি খাল দখলমুক্ত রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। সোমবার (২ জুন) বিকেলে সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের কলিবুনিয়া সরকারি খাল দখলমুক্ত রাখার দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নেন নানান বয়সী ৫ শতাধিক মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শিক্ষক মুনতা শেখ, শেখ শামিম হাসান অনিক, পিপলু ফকির, আলী আজগর, হৃদয় ফকির, ইব্রাহিম ফকির, ওসমান শেখ, সাহমত শেখ এবং ডিকলার ফকিরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। মানববন্ধনে এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহল কলিবুনিয়া সরকারি খাল দখল করে মাছ চাষ করে আসছিল। এর ফলে জলাবদ্ধতা ও ফসলহানির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
ডিকলার ফকির বলেন, ‘কলিবুনিয়া সরকারি খালে একাধিক স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছিল একটি প্রভাবশালী চক্র। গত বছরের ৫ আগস্টের পর এলাকাবাসী কলিবুনিয়া সরকারি খাল দখলমুক্ত করা হয়। এরপর আবারও এক শ্রেণির সুবিধাভোগীরা মাছ চাষ করার নামে খালের একাধিক জায়গায় বাঁধ দিয়েছে। ফলে দুটি ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ফসলাদির ক্ষতি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দ্রুত এই খাল থেকে বাঁধগুলো অপসারণ করে প্রবহমান দেখতে চাই। যাতে চাষাবাদের জন্য ফসলি জমি উৎপাদনমুখী করতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
হৃদয় ফকির নামে একজন বলেন, ‘কোনো অপশক্তি যেন এই নদীকে দখল করতে না পারে, সেদিকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এক শ্রেণির সুবিধাভোগীরা এই নদী আবারও দখল করতে চাইছে।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘শফিকুল ইসলাম শাওন, জাখির গাজি, বাইজীদ শেখ, আলো শেখ এবং সুমন শেখ বারবার এই নদী দখল করার চেষ্টা করছেন। এদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মানবাধিকারকর্মী শেখ শামিম হাসান অনিক তার বক্তব্যে বলেন, ‘নদী ও খালের মতো প্রাকৃতিক জলাধারগুলো দখল করা সম্পূর্ণ অবৈধ। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ব্যক্তিগত লাভের জন্য হাজার হাজার কৃষকের জীবন-জীবিকাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এই অবৈধ দখলদারিত্বের ফলে কেবল ফসলের ক্ষতি হচ্ছে না, পরিবেশেরও মারাত্মক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিচ্ছে। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এই দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং কলিবুনিয়া খালকে স্থায়ীভাবে দখলমুক্ত করে জন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, সরকার যেন এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে কৃষকদের দুর্দশা লাঘব করে। খাল দখলমুক্ত করতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি পূরণ না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করার কথা জানান।