আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
সরকার সবশেষ এলপি গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে গত ২ ফেব্রুয়ারি। ওইসময় ১২ কেজির প্রতি সিলিন্ডারের দাম বাড়ানো হয় ১৯ টাকা। ফলে এলপিজি ১২ কেজির প্রতি সিলিন্ডারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৪৭৮ টাকা। এরপর টানা তিনমাস দাম কমেছে। সবশেষ জুন মাসের জন্য এক হাজার ৪৩১ টাকা থেকে ২৮ টাকা কমে এক হাজার ৪০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২ জুন) নতুন এ মূল্যের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সন্ধ্যা থেকে এটি কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে বাস্তবে এর কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
খুচরা বাজার অতিরিক্ত দামেই কিনতে হচ্ছে গ্যাস। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রাহকরা। কুড়িগ্রামে খুচরা বাজারগুলোতে এমনই চিত্র দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোক্তা পর্যায়ে যমুনা গ্যাসের প্রতি সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৪২০ টাকা, ওমেরা এক হাজার ৪৮০ টাকা এবং অন্য কোম্পানির সিলিন্ডারগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। এলপি গ্যাস কিনতে আসা জেলা শহরের নয়াগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মমিন মিয়া বলে, ‘সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে গেছে। কিনতে এসে শুনি আগের দামই আছে। সরকার কোনো জিনিসের দাম বাড়ালে সেটা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়। অথচ দাম কমার ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য করা যায় না।
সাদিয়া আক্তার মিষ্টি নামের একজন গৃহবধূ বলেন, ‘আগে থেকেই ওমেরা সিলিন্ডার ব্যবহার করি। গ্যাস শেষ হওয়ায় আজ কিনতে এসে দেখি আগের দাম এক হাজার ৪৮০ টাকা চাচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশে করে তিনি বলেন, ‘প্রতিমাসে সিলিন্ডারের দাম ঘোষণা হয় কিন্তু দোকানে গিয়ে সেই দামে পাওয়া যায় না। এ বিষয়ে কিছু বললেই নানান অজুহাত দেখান ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতিমাসে সিলিন্ডারের দাম কমে এবং বাড়ে। যদি কোনো মাসে দাম বাড়ে তাহলে তার আগের মাস থেকে কোম্পানিগুলো ঠিকমতো সিলিন্ডার সরবরাহ করে না। চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যায় না। একবার দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশি দাম নেয়। কিন্তু একবার দাম কমলে অনেক অজুহাত দেখিয়ে আগের দামে কিনতে হয়।
নাগেশ্বরী শহরের খুচরা ব্যবসায়ী আলিম হোসেন বলেন, ‘ডিলাররা দাম না কমালে আমাদের কিছু করার থাকে না। গ্রাহক এসে কম দামের কথা বলে। কিন্তু লস করে তো বিক্রি করা যাবে না। এ বিষয়ে কথা হয় ওমেরা গ্যাস সিলিন্ডারের কুড়িগ্রাম জেলা পরিবেশক সাহা ব্রাদাসের স্বত্বাধিকারি রিন্টু সাহার সঙ্গে। তিনি বলেন, দাম কমেছে শুনেছি। তবে আজ দুপুর পর্যন্ত এ বিষয়ে কোম্পানি থেকে কোনো মেসেজ (বার্তা) পাইনি। ফলে আগের দামে সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম জেলার সহকারী পরিচালক শেখ সাদী বলেন, বিষয়টি তদারকি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।