লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।
অনুমতি ছাড়া জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না, এমন সরকারি নির্দেশ অমান্য করে লাকসামের বিভিন্ন এলাকায় ফসলি কৃষিজমিতে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে কমছে কৃষিজমি।
কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলাকার একশ্রেণির অসাধু মানুষ ও নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ এর একজন প্রভাবশালী নেতা সাবেক ইউনিয়ন সভাপতি নাজমুল হক কৃষকদের হুমকি দিয়ে কমদামে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করে এবং কৃষিজমিতে ড্রেজার দিয়ে মাটি খনন করে আসছেন। মাটি খনন করার পর চড়া দামে বিক্রি করা হয়। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে এমন অপরাধ করলেও তা বন্ধে প্রশাসন তেমন কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না।
এভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি খনন করায় উপজেলায় প্রতিবছর কৃষিজমির পরিমাণ ২ থেকে ৩ শতাংশ হারে কমছে। এতে কৃষিপণ্য উৎপাদন কম হচ্ছে। খনন করা জমির পাশের অনেক আবাদি জমি প্লাবিত হচ্ছে। কৃষকেরা এ নিয়ে মহাবিপদের মধ্যে আছেন।
ভুক্তভোগী কৃষকেরা অভিযোগ করেন, ড্রেজার দিয়ে খনন করে মাটি বিক্রি করা হয়। যে জমিতে ধান চাষ হতো, সে জমিতে এখন পুকুর কাটা হচ্ছে। এরফলে সেচের পানি জমিতে থাকছে না। ফসলি জমির পানি পুকুরে নেমে যাচ্ছে। এতে চাষিরা ভালো করে ধানসহ অন্য ফসলের চাষও করতে পারছেন না। বছরে দুই মৌসুমে ধান চাষ হলেও এখন অর্ধেক জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক রবিউল হোসেন বলেন, ‘কৃষিজমিতে ড্রেজার দিয়ে মাটি খনন করে ট্রাক ট্রাক মাটি নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে এলাকার বিভিন্ন জায়গায়। কৃষকদের মোটা টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়।’
কৃষক ছালেহ আহম্মদ বলেন, ‘ফসলি জমিতে যেভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি খনন করা হয়েছে, তাতে আমাদের কৃষিজমিতে পানি থাকছে না। এতে ফসল উৎপাদনের অনেক ক্ষতি হচ্ছে এবং চারপাশের জমিগুলো ধ্বসে গিয়ে নদী ভাঙ্গনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাজমুলের বক্তব্য নিতে মোবাইল ফোনে কল দিলে নাম্বার টি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর নিকট ভূমি খেকো নাজমুল হকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন, ক্ষতিপূরণ, নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে কৃষি জমি, জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় লিখিত অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন এর সাথে যোগাযোগ করলে তাহারা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে ফসলি জমি বাঁচাতে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।