মো:রমিজ আলী, সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি(চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রামের সমুদ্রপ্রিয় পর্যটকদের কাছে সৈকত বলতে একসময় পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, আনোয়ারা পালকির চরই একটি সুপরিচিত ও ভ্রমণ গন্তব্য ছিল মানুষের মাঝে। তবে সময় পরিবর্তনশীল,আর এই পরিবর্তনের ফলে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে গড়ে উঠেছে সমুদ্র ভ্রমণের নতুন পর্যটন স্পট। প্রাকৃতিক পরিবেশের এমন এক সমুদ্রসৈকতের নাম হচ্ছে আকিলপুর সমুদ্রসৈকত।এটি সীতাকুণ্ড উপজেলার ৬নং বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের শেষ প্রান্তে অবস্থিত। যেখানে বর্তমানে পর্যটকদের মাঝে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে এই সৈকতের সৌন্দর্য ও প্রশান্তি এবং মনোরম পরিবেশ।এই মনোরম পরিবেশ উপভোগ করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সব ধরনের ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসে এই সমুদ্রসৈকতে।
চট্টগ্রাম মহানগর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূরে ছোট কুমিরা বাজারের পশ্চিমে নূরীয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসা কিংবা নিমতলা রোড ঘেঁষে প্রায় এক কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে মনোরম আকিলপুর সমুদ্রসৈকত। চট্টগ্রাম শহর থেকে বাসে চেপে ছোট কুমিরা নেমে জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়ায় লোকাল সিএনজি যোগে এক কিলোমিটার সামনে আকিলপুর গ্রামে নামিয়ে দেবে। সিএনজি থেকে নেমে ৫ মিনিট হেঁটে গেলেই পৌছে যাবেন এই মনোরম পরিবেশ আর সমুদ্র সৈকতে। বর্তমানে ছোট কুমিরা থেকে আকিলপুর যাওয়ার সড়কটি বেশ সরু ও ভাঙাচোরা হওয়ায় গাড়ি চলাচল খানিকটা কষ্টসাধ্য। তবে চলতি পথে এই গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ, বিস্তীর্ণ ফসলি জমি, গ্রামীণ জনজীবনের দৃশ্য আপনার সব কষ্টকে ভুলিয়ে দিবে। এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে আপনি মুহুর্তেই পৌঁছে যাবেন এই সমুদ্রসৈকতে। শুক্রবারে এই সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা কিছুটা বেশি থাকে। তাছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতে নির্জন নিরিবিলি পরিবেশে প্রশান্তি নিতে চাইলে আপনাকে এই সমুদ্রসৈকতে আসতেই হবে।
একটা সময় এই সৈকতের বাঁধ ছিল না। ফলে গ্রামটি ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ডুবে যেত। পরে বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সমুদ্রপাড়ে বাঁধ নির্মাণ করে সরকার। সৌন্দর্য বর্ধনে বাঁধের আশপাশে লাগানো হয় সারি সারি নারিকেলসহ বিভিন্ন গাছ। সারি সারি এসব গাছের দৃশ্য আপনাকে বিমোহিত করবেই।
ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসছেন এই সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য। তবে পর্যটক বাড়ায় সমুদ্রসৈকতের পরিবেশে বেড়েছে আবর্জনার সংখ্যা। পর্যটকরা প্লাস্টিক-পলিথিন যেখানে সেখানে ফেলছে যা সমুদ্র ও এখানকার জীববৈচিত্র্যর জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এক্ষেত্রে পর্যটকদের বেশ সচেতন হতে হবে। অপার সৌন্দর্যের সম্ভাবনাময়ী এই আকিলপুর সমুদ্র সৈকতের যাতায়াত ব্যবস্থা,পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থায়ী ডাস্টবিন তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণকরলে এটি অন্যতম পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উঠবে সেই সাথে অর্থনীতিতেও বিরাট অবদান রাখবে আকিলপুর সমুদ্র সৈকত।