আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
আদালতের দেওয়া এক দিনের কারাদণ্ডাদেশ ও গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে অফিস করছেন কুড়িগ্রাম জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী। প্রায় দেড় মাস আগে সাজার আদেশ ও পরোয়ানা জারি হলেও আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি ওই কর্মকর্তা। থানায় পরোয়ানা পৌঁছালেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। কুড়িগ্রাম জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মুহা. হুমাউন কবির প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীর অফিসে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রবেশন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে উপস্থিত পাওয়া গেছে। এর আগে চলতি বছরের ১৩ মার্চ প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীকে এক দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সদর আমলি)। একাধিকবার আদালতের আদেশ অমান্য, নির্ধারিত তারিখে প্রতিবেদন দাখিল না করা এবং সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা না দেওয়ায় তাকে এ সাজা দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত গোলাম রব্বানী পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সাজা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা কুড়িগ্রাম সদর থানাসহ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী লিয়াকত আলী। তবে সোমবার (২৬ মে) পর্যন্ত ওই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। তিনি ইচ্ছামতো অফিসে যাতায়াত করেন। আদালত কিংবা নিজ বিভাগের জারি করা আদেশ প্রতিপালনে তার অনীহা রয়েছে। এ নিয়ে খোদ সমাজসেবা অধিদফতর তার ওপর ‘বিরক্ত’। জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আদালত সাজা দেওয়ার বিষয়টি আমি জানি। আমার কর্তৃপক্ষও বিষয়টি অবগত। আদালতের আদেশ প্রতিপালনে অবজ্ঞা এবং অফিস উপস্থিতি নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি অবজ্ঞা করিনি। আদালত কেন অমন করে বলেছেন তা আমার জানা নেই। আর আমি নিয়মিত অফিস করি। কর্তৃপক্ষ কেন এভাবে বলেছে আমি জানি না।
তবে গোলাম রব্বানীর এমন দাবির বিপরীত বলেছেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মুহা. হুমাউন কবির। তিনি বলেন, ‘প্রবেশন কর্মকর্তার কারাদণ্ডের আদেশের কপি পাওয়ার পর বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তিনি (গোলাম রব্বানী) নিয়মকানুন মানছেন না। মাঝে মাঝে অফিস করছেন। মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছে। শুনানির জন্য তাকে ডাকলেও তিনি উপস্থিত হননি। আমরা বলেছিলাম কিন্তু তিনি যাননি। কুড়িগ্রাম সদর থানার ওয়ারেন্ট অফিসার এসআই সাইফুল্লাহ বলেন, ‘ওয়ারেন্ট হাতে পেয়েছি। আদালতের আদেশ দ্রুত তামিল করা হবে।’