মকবুল হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেছেন, ত্রিশালবাসীর নিকট জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদযাপন কেবলই একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং একটি আবেগ, দায়বদ্ধতা, প্রেরণার নাম। জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী যেন অন্য কোথাও নয়, বরং জাতীয়ভাবে ত্রিশালেই উদযাপন করা হয়, সে ব্যাপারে নিজ জায়গা থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করবেন। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নজরুলকে কেবল স্মরণ নয়, তার চেতনা, মানবিকতাকে হৃদয়ে, মননে ধারণ করার প্রত্যয় যেন সৃষ্টি হয় সকলের মাঝে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত আজ ২৫শে মে রবিবার অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি। আজ বিকেলে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার দরিরামপুরে ‘চব্বিশের গণ অভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি বলেন, নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, অভিনেতা, গীতিকার, সুরকার। নানা গুণে গুণান্বিত জাতীয় কবি ছিলেন এক ধ্রুবতারা। তিনি ছিলেন প্রেমের, দ্রোহের, মানবতার কবি। বাঙালির আবেগ, অনুভূতিতে জড়িয়ে আছেন তিনি। সাম্রাজ্যবাদ, বৈষম্যের প্রতি কবি হয়েছেন বিদ্রোহী। সাম্যের পক্ষে ছিলেন তিনি। ব্রিটিশ আন্দোলনে যেমন কবি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, তেমনি তার গান, সৃষ্টির চেতনা ৫২ থেকে ২৪ পর্যন্ত গড়িয়েছে। ২৪ এর আন্দোলনে নজরুলের গান, কবিতা উদ্দীপিত করেছে ছাত্র-জনতাকে। তরুণ প্রজন্মের কাছে নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা ব্যাপক। উদ্বোধনী দিনের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ। তিনি বলেন, কবি নজরুল ছিলেন বহুধা প্রতিভাসম্পন্ন। আধ্যাত্মিকতায়ও তার পথচারণা ছিলো। তিনি ছিলেন একমাত্র কবি যিনি ইসলামিক গান, গজল, কবিতায় বাংলার সাথে আরবি, ফার্সি শব্দের অসাধারণ ব্যঞ্জনার সৃষ্টি করেছেন। আজ পর্যন্ত কবি নজরুল প্রাসঙ্গিক হয়ে আছেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি মো. আতাউল কিবরিয়া, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য-২ ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন। স্মারক বক্তব্য রাখেন, নজরুল গবেষক ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান, কবি ও নজরুল গবেষক মাহমুদুল হাসান নিজামী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্যগণ, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিনুরাগী, স্বেচ্ছাসেবক, ত্রিশালের বিভিন্ন স্তরের জনগণসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।